History

📖 আমাদের ইতিহাস

বিংশ শতকের চল্লিশের দশক— খড়্গপুরের ইন্দা এলাকা তখন ছিল শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রায় অন্ধকারে ঢাকা। আশেপাশে কোনও বিদ্যালয় না থাকায় এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা গ্রহণ ছিল অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার। সেই সময় এলাকার কিছু গুণী ও সচেতন মানুষ উদ্যোগ নেন এখানে একটি বিদ্যালয় গড়ে তোলার। তাদের উদ্যোগকে বাস্তব রূপ দিতে এগিয়ে আসেন মেদিনীপুরের প্রখ্যাত জমিদার কামাখ্যাচরণ মহাশয়। তিনি উদার হস্তে জমি দান করেন এবং তাঁর পিতা, প্রয়াত কৃষ্ণলাল মজুমদারের স্মৃতিকে অমর করে রাখতে বিদ্যালয়ের নামকরণ হয় ইন্দা কৃষ্ণলাল শিক্ষা নিকেতন।

১৯৪৫ সালের জানুয়ারি মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় বিদ্যালয়ের পথচলা। প্রথমদিকে এটি ছিল প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এরপর ধীরে ধীরে উচ্চতর স্তরে উন্নীত হতে থাকে—

• ১৯৫০ সালে এই বিদ্যালয়ের ছাত্ররা প্রথমবারের জন্য স্কুল ফাইনাল পরীক্ষায় বসে।

• ১৯৬১ সালে বিদ্যালয়টি তদানীন্তন উচ্চমাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হয়।

• ১৯৭৬ সালে নতুন শিক্ষা কাঠামোর (১০ + ২) আওতায় বিদ্যালয় উচ্চমাধ্যমিকের পূর্ণ স্বীকৃতি লাভ করে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিদ্যালয়টি এলাকার শিক্ষাক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সীমিত আর্থিক ক্ষমতার মধ্যেও বিদ্যালয় সর্বদা অবকাঠামোগত উন্নয়নের পথে এগিয়েছে— নতুন ভবন, আধুনিক বিজ্ঞান ও ভূগোল পরীক্ষাগার, লাইব্রেরি, এবং সম্প্রতি সোলার প্রজেক্ট চালু হয়েছে, যা বিদ্যালয়ের স্বনির্ভরতার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

ক্রমে এই প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র একটি শিক্ষা কেন্দ্রই নয়, বরং এলাকাবাসীর সাংস্কৃতিক ও সামাজিক জীবনেরও অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। পাঠ্যক্রমের পাশাপাশি বিদ্যালয়ে চলতে থাকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলা ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতা।

আজ ইন্দা কৃষ্ণলাল শিক্ষা নিকেতন শুধু ইন্দা বা খড়্গপুরের নয়, সমগ্র মেদিনীপুর জেলায় এক সুপরিচিত শিক্ষাকেন্দ্র। এই বিদ্যালয় থেকে বহু কৃতী ছাত্র-ছাত্রী বেরিয়ে গেছেন, যারা জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন— শিক্ষা, খেলাধুলা, সাহিত্য, শিল্প ও রাজনীতিতে বিশেষ কৃতিত্ব অর্জন করেছেন।